শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপাের্ট : ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ অংশগ্রহণ বা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মুক্তিযুদ্ধ যোগদান না করে ভোলা সদর উপজেলার ২নং পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের জাংগালিয়া ৭নং ওয়ার্ড ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।এবং এই সনদে ব্যবহার করে উক্ত পরিবারের মোট ৫ সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধা কোঠায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে চাকুরী করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায় পশ্চিম ইলিশা জাংগালিয়া ৭নং ওয়ার্ড এর মৃত আব্দুল হাসিমের পুত্র, মৃত সাহ সেকান্দার আলী। বিগত কয়েক বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন।তবে তার জালিয়াতি করে মুক্তিযোদ্ধার সনদে ভাতা সহ সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন সন্তানেরা। উল্লেখ্য মুক্তিযোদ্ধার সাহ সেকান্দর আলীর ভুয়া সনদ বিষয়ে ২০১১সালে দৈনিক আমার কাগজ এবং ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে ৮ তারিখে জনপ্রিয় জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকা সহ ভোলার বিভিন্ন আঞ্চলিক পত্রিকায় শিরোনাম সংবাদ প্রকাশিত হয়।
তবে বর্তমান এবিষয়ে সরকারের মুক্তিযুদ্ধের সনদ পুনরায় যখন যাচাই বাচাইয়ের হালনাগাদ করা সিদ্ধান্তে উপনীত হয় তখন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল চেয়ে স্থানীয় এলাকার বাসিন্দারা অভিযুক্ত সাহ সেকান্দর আলীর বড় ভাই মোহাম্মদ হানিফ ডাক্তার জেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও জেলা প্রশাসক হস্তক্ষেপ কামনায় একটি আবেদন জানান। যার পদক্ষেপ অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ নিতে গত ৩/২/২১ তারিখে সহকারী কমিশনার আমলে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সত্যতা যাচাইয়ের আদেশ প্রধান করা হয়।
এবিষয়ে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ নেয়া মৃত সাহ সেকান্দর আলীর বড় ভাই মোহাম্মদ হানিফ ডা. জানান,১৯৫৮-১৯৭৫ সাল পযন্ত তারা যৌথ পরিবারে একত্রে বসবাস করতেন। এবং ১৯৭৫ এর পরবর্তী সময় জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় থাকাকালীন ছোট ভাই সাহ সিকান্দার আলী গ্রাম সরকারের দায়িত্ব নিয়ীজিত ছিলেন। তার পরিবারের বড় আলী আকবর ওরফে (বড় ভাই) মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এবং তিনি মেহেরপুর মহকুমা দায়িত্বভার গ্রহন করেন। পরে ২০০৫ সালে বিএনপির জোট সরকারের রাজনৈতিক প্রভাব ও অর্থের বিনিময়ে ভুয়া সনদ গ্রহন করেন।
অপরদিকে একজন মুক্তিযােদ্ধা হিসেবে শামছুল হকের পুত্র মোঃ মোশারফ হোসেন তাহার নাম মুক্তিযুদ্ধকালীন বিষয়টি কেন্দ্রিয় কমান্ড কাউন্সিল বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ৩৯৩ , নিউ ইস্কাটন মগবাজার ঢাকা বরাবর একটি সনদ বাতিলের অভিযোগ করেন। অত্র অভিযোগে জানা যায় বিগত বিএনপি জোট সরকারের সময়ে রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তির উতকোচের মাধ্যমে সেকান্দর আলী ভুয়া মুক্তিযােদ্ধার সাটিফিকেট সংগ্রহ,করে।যাহার স্মারক নং হ -৯৮০৭৩ ,তারিখ ০৭-০৮ ২০০৫ ।
অভিযোগ কাবীর দাবি সেকান্দর আলী সারটিফিকেট পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযোদ্ধার সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছে। সনদ ব্যবহার করে ভোলা উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা কার্ড করিয়ে নেন।যাহার নং১৪৪।এই সারটিফিকেট ব্যবহার করে তার দুই ছেলেমেয়ে সহ মোট ৫জন সরকারি চাকুরী করছেন বলেও জানা যায়। তারা হলেন মো. শমসের আলী পশ্চিম ইলিশা পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক দায়িত্ব রয়েছেন।
মোহাম্মদ ওমর কাইয়ুম পুলিশ কনষ্টেবল বরিশাল রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স, মোশাম্মত নাদিরা বেগম ও শিরিন সুলতানা সরকারি প্রাইমারি স্কুলে সহকারী শিক্ষিকা এ সনদ ব্যবহার করে সরকারী চাকুরী ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সহ সকল সুবিধা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় জনতার। এদিকে ভুয়া সনদ বাতিল বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করে ৭নং ওয়ার্ড বাসিন্দা মো.আবু তাহের লিখিত জবানবন্দিতে জানান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি প্রাপ্ত বয়স্ক ছিলেন। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা মৃত সেকান্দর আলী তার বয়সে অনেক ছোট।সেই সময় সে লেখাপড়া করতেন। ১৯৭১ যুদ্ধেসময় তিনি এসএসসি পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।
তবে ২০০৫ সালে বিএনপির সরকার আমলে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় সনদ সুবিদা ভোগ করতে এ পরিচয় জালিয়াতি করেন। জাংগালিয়া ৮ নং ওয়ার্ড মো. আবুল কাসেম জানান সাহ সিকান্দার আলী তারা দুইজন সমবয়সী।তার জানামতে সে মুক্তিযোদ্ধা নয়।তবে ২০০৫সালে ভুয়া সনদ তৈরী করার বিষয়টি জানতেন। জাংগালিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অপর এক মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী বলেন জাংগালিয়া তথা পশ্চিম ইলিশায় কারা সরাসরি যুদ্ধ করেছেন বা কারা মুক্তিযুদ্ধের সময়কার তিনি তা জানেন।তার দাবি সেকান্দর আলী কখনোই যুদ্ধ অংশগ্রহণ করেনি।
তাকে বরং তারা পাক হানাদার বাহিনীর হতে মুক্তিযুদ্ধের চলাকালীন লুকিয়ে নিরাপত্তা রাখতেন। ২০০৫ সালে বিএনপির সরকার প্রভাবে এই ভুয়া সনদ গ্রহন করেন। এছড়াও এলাকার অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধ সময়কার সাক্ষী হালিনুর,সিরাজ, রাড়ি বাড়ির মুক্তি বাহিনীক্যাম্পিং থাকা বখসী, বারেক, আবুল কাশেমসব ব্যক্তিরা একাধিক জবানবন্দিতে সেকান্দর আলীর মুক্তিযুদ্ধ করার বিষয়ে কোন তথ্যপ্রমাণ তাদের জানা নেই বলেও সাক্ষ্য দেন।
এবিষয়ে বিষয়ে ভোলার উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান তিনি অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানান। ভুয়া সনদে সরকারি চাকুরী বিষয়ে সেকান্দর আলীর সন্তান শমসেরের আলীর নাম্বারে ফোন দিলেও তার বক্তব্য নেয়া সম্বব হয়নি।